হার্ট অফ স্টোন
আমাদের তিনটি জিনিস অনেক প্রয়োজনীয়, আমরা সেগুলো ছাড়া একেবারেই বাঁচতে পারি না। আর তা হল আবেগ, অনুভূতি আর একটি জীবন। যদিও আমাদের শরীরে খাবার এবং পানির প্রয়োজন আছে, তবুও একটি জীবনে আবেগ, অনুভূতি ছাড়া কেউ তাকে মানুষ বলে গণ্য করে না। আমি এটি সবসময় অনুভব করি যে, আমি একজন সুখী মানুষ। কারণ আমি সবসময় আমার আসল পরিচয় দিই, এভাবেই আমি নিজের গল্প তৈরি করতে পেরেছি ধীরে ধীরে। অবশ্যই এটি সুখের সেই সাথে আনন্দের গল্প। আপনি যতক্ষণ আপনার লুকায়িত পরিচয় অন্যের কাছে লুকিয়ে রাখতে পারবেন, আপনি তত বেশি সুখী থাকতে পারবেন।
মানুষ সাধারণত অসুখী মানুষদের প্রতি দয়া এবং করুণা প্রদর্শন করে এবং একটা সময় অবহেলা করতে শুরু করে। কিন্তু কেউই এমন জীবন যাপন করতে চায়না, কারণ সবাই জীবনের একটি ভিন্ন গল্প তৈরিতে বিশ্বাসী। আমিও আমার জীবনের গল্প তখন থেকেই শুরু করেছি, যখন থেকে আমি মানুষদের বুঝতে শিখেছি। আমার জীবনের গল্প ৫ বছর বয়স থেকেই শুরু হয়েছিল। সেই সময়টায় কার্টুন দেখে এবং ছবি একেঁই পাড় করে দিতাম। ঐটা আমার জন্য সবথেকে সুন্দর মুহূর্ত ছিল।
ছোটবেলা থেকেই আমি স্বপ্নের পিছনে ছুটে বড় হয়েছি। আমি স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসতাম এবং আমার অনেক স্বপ্ন ছিল। আমি জীবনে যা করেছি তার মূল উদ্দেশ্য ছিল জীবন পরিপূর্ণ করার, আমি সবসময় সৃজনশীল বালক ছিলাম। আমি আমার স্কুল জীবনে প্রচুর বন্ধু তৈরি করেছিলাম, তাদের সাথ সুন্দর সময়গুলো উপভোগ করেছি। কিন্তু এখন তাদের কেউ নেই আমার পাশে। আমার একজন বন্ধু ছিল যে অন্যদের মতো ছিল না।
সে অন্য শান্ত বাচ্চাদের মতো ছিলো যে ভীড় পছন্দ করতো৷ আমারও বেশি কোলাহল পছন্দ না। সে শান্ত এবং সব সময় সঠিক সিদ্ধান্তে অটুট থেকেছে। আনন্দের সেই সময় পেরিয়ে আমরা বিদ্যালয়ের ভর্তি হই। আমি আশা করেছিলাম আমার আগের স্কুলের অস্তিত্ব ভার্সিটিতেও খুঁজে পাবো। আমার মধ্যে আমি একটি সৃজনশীল ব্যক্তিত্ব অনুভব করতাম। যার কারণে আমি সব সময় খুশি থাকতাম। আগের স্কুলের বেশিরভাগ বন্ধুদের আমার বিদায় জানাতে হয়েছিল কারণ তারা আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় বেছে নিয়েছিল। কিন্তু আমার সেই শান্ত বন্ধু আমার সাথেই থেকে গিয়েছিলো। আমাদের দুজনের বন্ধুত্ব আরো গভীর হতে শুরু করে।
আমরা একসাথে প্রচুর আড্ডা দিতাম, ভিডিও গেম খেলতাম এবং একসাথে সিনেমা দেখতে যেতাম। আমরা যখন সত্তম সেমিস্টারের কাছাকাছি, আমি আমার বন্ধুর অস্তিত্বকে ঝাপসা দেখতে শুরু করি। একজন ভালো বন্ধুকে হারানোর ভয়ে চিন্তিত হয়ে উঠলাম। অবশেষে আমি তার বাড়ি যাই কিন্তু সেখানে তারা ছিল না। আমি তার সকল প্রিয় জায়গা গুলোতে গিয়েছিলাম, কিন্তু তাকে খুঁজে পাইনি। হঠাৎ করে সে ক্লাসে আসা বন্ধ করে দেয়। ঠিক এক সপ্তাহ পরে পুলিশ আমাদের ক্যাম্পাসে এসেছিলো,এবং পরেরদিন খবরের হেডলাইন দেখে আমি ভীষণ অবাক হই।
"২২ বছর বয়সের একটি যুবক নিজ বাড়িতে আত্মহত্যা করেছে।" আত্মহত্যা, আমার বন্ধু এটা কখনোই করতে পারে না। আমি বিশ্বাস করি সে এটা করবে না। কারণ সে আশেপাশের সবাইকে ভালোবাসতো, এবং নিজেকেও। সবাইকে নিজের মনে করতো, সবাইকে সম্মান করতো। এটা কোনোভাবেই হতে পারে না। সেদিন সন্ধ্যায় বাবা-মায়ের সাথে রাতের নিউজ দেখতে বসে ছিলাম, সেখানেও সেই একই নিউজ দেখে নিজেকে সামলাতে কষ্ট হচ্ছিলো।
সেই রাত থেকে আমার জীবন বদলে গিয়েছিলো। আমার আলো, আমার স্বপ্ন, আমার আশা সব অন্ধকার সমুদ্রে ডুবে গিয়েছিল। আমি নিজের মনের ভিতরে একটি আলোকিত শহর তৈরি করেছিলাম। যেখানে শুধু সুখ আর আনন্দ বসবাস করত,কিন্তু নিমিষেই সেদিন সব অদৃশ্য হয়ে যায়।
Hi @toushik, your post has been upvoted by @bdcommunity courtesy of @rehan12!
Support us by voting as a Hive Witness and/or by delegating HIVE POWER.
JOIN US ON