নীরার নতুন ঠিকানা ( সূচনামূলক ব্লগ )
হ্যালো, বিডি কমিউনিটির সবাইকে সুস্বাগতম জানাই।
উক্ত কমিউনিটিতে প্রথমবারের মতো একটি পোস্ট লিখতে যাচ্ছি, সবার জন্য শুভকামনা রইলো। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। আর যদি লেখাটি পড়ে ভালো লাগে, তাহলে নিজেদের মতামত ও সাপোর্ট জানাবেন - এ প্রত্যাশা করি। ধন্যবাদ।
সকাল থেকেই নীরার মন বেশ খারাপ। আজ ইউনিভার্সিটিতে যেতে মন চাচ্ছে না, যদিও তার ক্লাস শেষ হয়ে গিয়েছে। কখন যে ভোরের পর বেলা গড়িয়ে যেতে শুরু করলো, তার আর কোন হিসাব সে রাখতে পারে না।
সকালবেলার নাস্তা সেরে সে ঠিক করলো বেরিয়ে পড়বে আজ সেই পার্কে যেদিন তার প্রিয় বন্ধু ও ভালোবাসার মানুষটার সাথে প্রথম দেখা হয়েছিল। মাঝখান দিয়ে অনেক সময় পেরিয়ে যায়, দুজনের মন দেয়া নেয়া বেশ ভালোভাবেই চলছিল।
Src
সেদিন আকাশটা পরিস্কার ঝকঝকে ছিল। এমন এক বসন্তের দিনে এসে প্রকৃতি তার আপণ সাজে সেজেছিল। নীরা ছোটবেলা থেকেই খুব ভাবুক স্বভাবের, প্রকৃতির মধ্যে ঘটে যাওয়া নানা পটপরিবর্তন, সজীবতায় ঘিরে ধরা আবহাওয়া মাঠ তাকে পুলক বোধ করিয়ে যেত।
ধীরে ধীরে যখন সময় এগিয়ে চলেছে, সে খুঁজে চলেছিল মনে মনে তার প্রিয় মানুষটাকে। তার বারেবারে মনে হতো, হয়তো ভালোবাসার মানুষটা কোথাও লুকিয়ে আছে অন্যখানে ভবিষ্যতের আড়ালে যেখানে শত শত গোলাপের বাগান ঘিরে আছে। অপেক্ষার পালা তার বেড়ে যেতে চাইতো, কিন্তু তখনো ঢের বাকি, অনেকটা পথ পাড়ি দেবার যে আছে।
নীরা একদিন ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসের একটি ক্যান্টিনে বসে চা খাচ্ছে। এমন সময় বেশ সুশ্রী একটি ছেলে তার পাশে বসলো। তারা ধীরে ধীরে একে অপরের পরিচিত হতে থাকলো। যতই জানতে লাগলো, ততই তারা নিজেদের মধ্যে মিল খুঁজে পাচ্ছিল।
জীবনের ধর্ম হলো এই যদি কেউ কারো সাথে নিজের মিল খুঁজে পায়, তখন তাকে ক্রমশ দূর থেকে কাছে টেনে নিতে শুরু করে। নীরার ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছিল। তারা বুঝতে পারে নি, সময়ের পরিক্রমায় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এক সময় গড়িয়ে গিয়ে তা রূপ নেয় ভালোবাসায়।
চাওয়া পাওয়ার তো বেশি শেষ নেই। নীরা দেখতে পেল, তার প্রতি ছেলেটি দুর্বল হয়ে পড়েছে। তার ভালোবাসায় সেও জড়িয়ে যেতে শুরু করেছে। মায়ার বাঁধন তাকে ধীরে ধীরে ঘিরে ধরেছে, যার থেকে সে নিস্তার খুঁজে পায় না।
একদিন নীরা ছেলেটির থেকে একটি প্রস্তাব পেয়ে বসে। তারা দুজন বিয়ের বাঁধনে জড়াতে চায়। মেয়েটির বিষয় সম্পত্তির প্রতি কোন লোভ ছিল না, তা তাকে আকৃষ্ট করতো না।
সে বুঝতে পেরেছিল, অর্থ সম্পদের চেয়ে মন বড়, কারণ এক সময় ভালোবাসার মূল মর্মের জায়গা হলো মায়া ও টান ঠিক আগের মতো আছে কি না। যদি থাকে সতেজ ও শুকিয়ে যাওয়া ফুলের বিপরীতে একটি অনাবিল হাসিমাখা মন তাহলে সে ভালোবাসা ফুরোয় না।
নীরা আগেই জানতো, ছেলেটির সে ছাড়া আপণ বলতে কেউ নেই। কখনো কোন দিন তাকে রাগ করতে সে দেখে নি। এক অদ্ভুত মায়া তার সারা মনপ্রাণ জুড়ে, যার থেকে সে নিস্তার পেতে পারে নি।
এমন করে দিন এগিয়ে চললো। ওদিকে নীরা একদিন দেখতে পেল, তার বাবা তার জন্য একটি পাত্র ঠিক করে রেখেছে। বড় বনেদি ঘর থেকে সুপাত্র, স্মার্ট ছেলে পাওয়া গেছে। এখন তার বাবা তাকে বিয়েতে রাজি হয়ে যেতে বলে।
Src
কিন্তুু নীরা নানা টালবাহানা ও দেরি করতে শুরু করে। প্রথমে সে সময় চেয়ে নেয়, বাবা খুব বেশিদিন অপেক্ষা করতে চায় না। কারণ যে সমাজে সে বড় হয়েছে, তার বাবা নানা লোক-প্রতিবেশীদের কাছ থেকে বিভিন্ন কথা শুনে এসেছে, মেয়েটির বয়স বেড়ে চলেছে।
পিতা আর অপেক্ষা করতে চায় না। বেশ স্বৈরাচারী হয়ে তিনি মেয়েকে ১ মাসের মধ্যে নিজের মত জানাতে বলেন। তিনি দেখলেন মেয়ে নাছোড়বান্দা, এভাবে দিন যায়, রাত যায় আর সময় এগিয়ে চলতে শুরু করে।
নীরা ছেলেটির সাথে দেখা করে বলে, বোধহয় শেষবারের মতো তার সাথে দেখা হয়েছে তার। আর তাকে মন খারাে না করার জন্য বলে। বিয়ের সানাই বাজছে। নানা আয়োজন চলছে।
ছেলেটি এসে মেয়েটিক তুলে নিয়ে যায়। তারা দুজন পালাতে থাকে। একসময়ের সুবোধ ছেলেটা ক্রমশ বেপরোয়া হয়ে ওঠে, তারপর তারা সুখে শান্তিতে বিয়ে করে সংসার গড়ে তোলে।
পরে নীরার বাবা বিয়ে মেনে নেয় আর এভাবে গল্পটা শেষ হয়ে যায়।
ধৈর্য্য ধরে পড়ার জন্য ধন্যবাদ। দেখা হবে আবারো কোন দিন। সে পর্যন্ত ভালোই থাকুন, সুস্থ থাকুন।
Congratulations @steemhiver! You have completed the following achievement on the Hive blockchain And have been rewarded with New badge(s)
Your next target is to reach 20 posts.
You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP