দ্যা রেপিস্ট
সব মেয়েদের সবথেকে বড় স্বপ্ন থাকে মা হওয়ার। সন্তান ছেলে হোক অথবা মেয়ে হোক সবাই শুধুমাত্র একটি সুস্থ বাচ্চা কামনা করে। এর থেকে বেশি কিছু হয়তো একজন মা কখনোই চায়না। কখনোই আলাদা করে কোন মাকে শুনতে দেখিনি যে আমার ছেলেই চাই। ছোটবেলা থেকেই হাজারো কবিতায় এবং বিভিন্ন উক্তিতে বাবা-মায়ের কথা শুনে এসেছি। পৃথিবীর সবথেকে নিরাপদ স্থান হলো বাবা-মায়ের কাছে। একটি সন্তান সমাজের কাছে খারাপ হতে পারে, কিন্তু কখনোই একজন মায়ের কাছে কোন সন্তান খারাপ হয় না। আমিও একদিন হয়তো একজন মা হব। অবশ্যই আমি চাইবো আমার সন্তান যেন পৃথিবীর সবথেকে নিরাপদ জায়গাটি পায়।
আমি পার্থক্য করি, আমি আলাদা করে চিন্তা করি। আমি চাইনা যে আমার কোলে ছোট্ট একটি মেয়ে শিশুর জন্ম হোক। আমি চাই আমার একটি ছেলে শিশু হোক । কেউ যদি আমাকে প্রশ্ন করে যে, আপনি সৃষ্টি কর্তার কাছে ছেলে নাকি মেয়ে চাইবেন। আমি নির্দ্বিধায় এই প্রশ্নের উত্তরে সৃষ্টিকর্তার কাছে একটি ছেলে শিশু চাইবো। যে সমাজে বাবার নামের পাশে কোন মেয়ে রেপিস্ট লিখে আত্মহত্যা করে। সেই সমাজে বেঁচে থাকতে আমি কখনোই চাইবো না আমার কোল জুড়ে একটি মেয়ে শিশুর জন্ম হোক। হ্যাঁ আমি একজন ছেলে শিশুকেই চাই।
যে বাইরে গেলে কখনো চিন্তা করতে হবে না যে, সে নিজের সতীত্ব নিয়ে ঘরে ফিরতে পারবে কিনা। আমি চাইনা কোন মেয়ে তার বাবার উপরে আঙ্গুল তুলে বলুক "আমার বাবাই আমার মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে"। আমি চাইনা এমন সমাজে নিজের কোলে একটি মেয়ে শিশু আসুক। যে সমাজে নিজের বাবার কাছেও একজন মেয়ে নিরাপদ নয়। ছোটবেলা থেকেই শুনে এসেছি সব মেয়েরাই নাকি বাবার কাছে রাজকন্যা। তাহলে কিছু বাবারা কেন এর ব্যতিক্রম ঘটায়। কেন নিজের মেয়ের কাছেই দানব হিসেবে রূপান্তর হয়। বাবার হাত ধরেই যে পথ চলা সেই বাবাই কেন সেই পথ অন্ধকার করে তোলে।
ছোটবেলা থেকেই দেখে এসেছি আমার বাবা নিজে না খেয়ে আমাদের খাইয়েছে। যখন কেউ কোন কিছু খেতে দিয়েছে, আমাদের কথা চিন্তা করে সেটা হাতে নিয়ে বাড়ি এসেছেন। অভাব থাকলেও বাবার চোখে কখনো অভাব দেখিনি আমাদের জন্য। বাবা এবং নিজের ভাইকে দেখেই সব সময় বিশ্বাস করেছি ছেলেরা কখনো খারাপ হয় না। একজন মেয়ে নিজের ভাই, নিজের বাবার কাছে সবথেকে নিরাপদে থাকে। আর যাই হোক একজন বাবা কোন মেয়ের কাছে কখনোই রেপিস্ট হতে পারে না। কিন্তু পৃথিবী এখন এই ঘটনারও সাক্ষী হয়েছে।
এটা আমাদের পুরো মানব জাতির জন্য লজ্জার। কখনোই একটা মুসলিম দেশে আমরা এই ঘটনার আশা করিনি। আমি জানিনা আমাদের মধ্যে কিসের ঘাটতি রয়েছে, কিভাবে আমরা মনুষ্যত্বের সকল গুণ হারিয়ে ফেলছি। কখনোই হয়তো একজন মা আর নিজের কোলে সন্তান হিসেবে একজন মেয়েকে আশা করবে না। আমি নিজেও চাইনা যে আমার কোলে একজন মেয়ের জন্ম হোক। যাকে নিয়ে আমার সারাক্ষণ ভয়ে থাকতে হবে। আমি জানিনা একজন মেয়ে কোথায় এখন নিরাপদ রয়েছে, নিজের ঘরে নাকি বাইরে। হয়তো এর প্রশ্নের উত্তরে সাধারন মানুষ এটাই বলবে যে, মেয়েরা এখন কোথাও নিরাপদ নয়।
তাহলে কিসের আশায় আমি চাইবো যে আমার কোলে একজন মেয়ে শিশুর জন্ম হোক। আমি চাই একটি ছেলে শিশু আসুক। যে সমাজ নিজের মনে করে একটি ছেলে শিশুকে গ্রহণ করে কিন্তু কখনোই একটি মেয়ে শিশুকে গ্রহণ করেনা। আমরা হয়তো মিছেমিছি এখনো আধুনিকতার পোশাক পড়ে থাকি, পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিচ্ছি আধুনিকতার বাণী। কিন্তু সত্যিই কি আমরা আধুনিক হয়েছি? যদি সত্যি আমরা আধুনিক হয়ে থাকি, তাহলে আমার সত্যি জানা নেই এই সমাজ কোন আধুনিকতার কথা বলছে।
আমরা আধুনিকতার সাথে সাথে যদি নিজেদের চিন্তা-ভাবনা গুলোকেও একটু আধুনিক করতে পারতাম তাহলে হয়তো এই দিনটি দেখতে হতো না।
আধুনিক এই সমাজে মানুষের মূল্যবোধ হারিয়ে গিয়েছে৷ বাবা-সন্তানের মধ্যে যে সম্পর্কটা থাকা প্রয়োজন তা আধুনিক সমাজে নেই বললেই চলে। আমরা শুধু নামেই আধুনিক হয়েছি, কাজে নয়!
ঠিক বলেছেন, সময়ের সাথে সাথে আমাদের মূল্যবোধ হারিয়ে যাচ্ছে। এখন কাকে বিশ্বাস করবো এটাই বড় প্রশ্ন।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য
খুব কঠিন একটি প্রশ্ন, কোথায় মেয়েরা নিরাপদ? এ সমাজে মনুষ্যত্বহীনতা নতুন কিছু নয়,তবে দিনে দিনে সমাজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও শেষ আশ্রয়স্থল পরিবারের মধ্যে এসে এটির বিকাশ ঘটবে - এতটুকু হয়তো কোনো সুশীল সমাজ আশা করেনি।
নৈতিক শিক্ষার কতটুকু অভাব রয়েছে তার মোক্ষম উদাহরন এটি, আফসোস সে বাবার প্রতি যে নিজের সন্তানকে আগলে রাখার বদলে ধ্বংস করে দেয়।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া, কোন কিছুই নতুন নয় কিন্তু এখন মানুষ কেমন যেন হিংস্র হয়ে গেছে। আমরা যে ঘটনা আগে কল্পনায়ও চিন্তা করতে পারতাম না এখন বাস্তবেই তা ঘটছে।
যুগ যত আধুনিক হচ্ছে মানুষের বিবেক তত নিচে নামছে ,কোথায় গেলে একটু নিরাপদে শ্বাস নেয়া যাবে এটি বলা এখন কঠিন হয়ে যাচ্ছে এটি মেয়ে হয়ে থেকে বেশি ভাঙ্গিয়ে বলার কিছু নেই ।
ধন্যবাদ আপু আপনার মন্তব্যের জন্য।
আমরা সব সময়ই পরিবর্তন আশা করেছি। আধুনিক যুগে বসবাস করার স্বপ্ন দেখেছি। কিন্তু কখনোই এমন আধুনিকতা প্রত্যাশা করিনি।
কয়েকদিন যাবৎ ফরেনসিক মেডিসিনে রেইপ চাপ্টারটা পড়ানো হচ্ছে,পড়তেছি।এতো বিশ্রী লাগে,আর এতো ভয়ংকর, ছয় বছরের বাচ্চা থেকে পঁচাশি বছরের বৃদ্ধা কেউই রেহায় পাচ্ছে না আজকাল।
বাস্তবে কখনো এমন হবে চিন্তা করতে পারতাম না আগে। আর এখন কয়েকদিন পরপরই এসব সোনা লাগে। মানুষ কিভাবে এতটা ভয়ংকর হয়ে ওঠে বুঝতে পারিনা।