চারুলতা.......(প্রথম প্রহর )
চারুলতার জীবনে তখন তীব্র শোক।ঘুম হয়না বহুদিন। উদাসীন থাকতে থাকতে দিন দুনিয়ার ব্যাপারে বেখেয়ালি ভাব এসে গেছে তার । লোকে ভেবেছে খারাপ হাওয়ার ছোয়া লেগেছে , ফকির দেখাতে হবে । মানুষ এসে নানা পরামর্শ দিয়ে যায় , চারুলতা হেসে সকল পরামর্শ উপেক্ষা করে । খারাপ হাওয়ার ছোয়াতে রেহাই পাওয়া যায় , কাউরে পরানে গেঁথে গেলে তার থেকে রেহাই পাওয়ার উপায় ফকিরের কাছে থাকেনা সে চারুলতা জানে ।
চারুলতা লোক মুখে শুনেছে , ভালোবাসলে নিজেকে ভুলতে হয় , নিজেকে ভাঙতে হয় । তবে সে নিজের থেকে বুঝেছে যে কখনই নিজেকে বোঝাতে হয়না , যে বুঝবার সে নিজেই বুঝবে !
জীবনে কয়েকবার হেরে গেলে হারার ভয় মনে গেঁথে যায় , হারের আবার ভিত্তি আছে , কাছের মানুষদের কাছে হারার অনুভূতি আবার শ্রেষ্ঠ অনুভূতি ।
চারুলতা ভীষণ রকমের কাল্পনিক । তার কল্পনা হয় বাস্তবতার বহু বাইরে একবারে নিজস্ব একলা দুনিয়ায় ।সেই দুনিয়ায় চারুলতা আর তার আপন মানুষ শান্তিতে বসবাস করে ।যেখানে কেউ কাউরে অপরের শান্তির দোহাই দিয়ে একলা ফেলে যায়না।নিজের ভাবনা অন্যকে বলতে বেগ পেতে হয়না । যেই দুনিয়ায় দুজন একসাথে থাকলে তৃতীয় কোনো অস্তিত্বের সামিল হওয়া হয়ে ওঠেনা ।
চারুলতা একলা খুব সুন্দর কাল্পনিক জগৎ বুনে নিয়েছে , ভালো থাকে সে কল্পনাকে আঁকড়ে ধরে । কল্পনাতে নিজের ফেলে আসা ক্ষত গুলো সুন্দর সুন্দর রং দিয়ে ভরে দেওয়া যায় । বাস্তবতা আর চারুলতাকে পায়না । কল্পনার জগতে মজে থাকলে চারুলতার নিশ্বাস নিতে বেগ পেতে হয়না , মাঝ রাতে মূহুর্ত মূহুর্ত জীবন হাতে নিয়ে আপন মানুষ হারাবার ভয় পেতে হয়না ।
কল্পনার জগতে রোজ রাতে চারুলতা ঘুমিয়ে সুন্দর স্বপ্ন দেখে , দুঃস্বপ্ন আর তারে পায়না । কল্পনাতে মজে গেলে আপন হারাবার যন্ত্রনা আর তার মনে ভাসেনা , অতঃপর তার ভালোবাসার জগতে ভালোবাসা দিতে দ্বিতীয় বাস্তবিক মানুষের দরকারই পরেনা !
লেখাটি পড়বার জন্য ধন্যবাদ , আজকের মতন এখানে বিদায় নিচ্ছি , আশা করছি দেখা হবে খুব শীঘ্রই ।