স্বাধীনতা 2.0
আজ দশ আগস্ট । আমাদের, বাংলাদেশের দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা অর্জনের পঞ্চম দিন ।আমরা দ্বিতীয় দফা স্বাধীনতা পেয়েছিলাম পাঁচ আগস্ট যা আমাদের ক্যালেন্ডারে ছত্রিশে জুলাই ফ্যাসিস্ট হাসিনার পদত্যাগ এর মাধ্যমে । কত শত শত প্রাণ গেছে যার পাক্কা হিসেব এখন অব্দি শেষ হয়নি । অনেক ক্ষতি হয়েছে তার মধ্যে সব থেকে বড় ক্ষতি যেটি হয়েছে তা হলো আমরা অনেক মেধাবী হারিয়েছি ।
মিছিলে যাবার জন্য যাত্রা ....
স্বৈরাচারী হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগের পর দেশের সর্বত্র দেখা যায় বিজয় মিছিল , খালি হয়ে যায় মিষ্টির দোকান !
স্বৈরাচারী হাসিনা আমাদের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছিল , কেড়ে নিয়েছিল কথা বলবার অধিকার , কেড়ে নিয়েছিল মতামত প্রকাশের অধিকার , কেড়ে নিয়েছিল সুন্দর স্বাভাবিক জীবন ধরণের অধিকার । বিগত পাঁচদিন আমি ব্যস্ত ছিলাম রাষ্ট্র সংস্কারের কাজে । যেহেতু স্বৈরাচারী হাসিনা পুলিশ বাহিনী দিয়ে ছাত্রদের গায়ে ও সাধারণ জনতার গায়ে বুলেট চালিয়েছিল , চালিয়েছিল টিয়ার গ্যাস , চালিয়েছিল ছাত্র খুঁজে থানায় আটকানোর চিরুনি অভিযান ! সেহেতু পুলিশ ও অনুতপ্ত ছিল , আবার বেশ কিছু জায়গায় বিক্ষুব্ধ জনতা আক্রমণও করেছিল পুলিশের উপরে । স্বৈরাচারী পালিয়ে গেছে , অনেক নেতা-মন্ত্রী পালিয়ে গেছে তবে পালতে পারেনি সাধারণ পুলিশ , আসল খুনিরা পালিয়ে গেছে অথচ কতগুলো পরিবার নিঃস্ব করে গেছে !
রাস্তা পরিষ্কার করছে শিক্ষার্থীরা ...
একটা দেশে সরকার নেই , প্রশাসন নেই তবে ছাত্র তো আছে , আমরা জেন-জি ( GEN- Z) , আমরা স্বৈরাচারীর পতন ঘটাতে পারি , রাস্তায় রাস্তায় দুর্গ গড়ে তুলতে পারি আবার দেশ সংস্কারও করতে পারি । ট্রাফিক পুলিশ রাস্তায় নেই তো কি হয়েছে ? দায়িত্ব নিয়ে নিলো ছাত্ররা ।তৈরী হলো উন্নয় বিশ্বের রাস্তার মতন ইমার্জেন্সি লেনও । রাস্তা পরিচ্ছন্নতা কর্মী নেই ? তো কি হয়েছে ছাত্ররাই দলবদ্ধ হয়ে পরিষ্কার করে দুচ্ছে রাস্তা।উৎসাহ পাচ্ছে সকল স্তরের মানুষের। দেয়ালে প্রতিবাদী লেখা ছিল তা মুছে রং করছে নানা সুন্দর সুন্দর চিত্রকর্ম , আন্দোলনের স্মৃতি আর ক্যালিগ্রাফি দিয়ে , তার করছে ছাত্ররাই । ছাত্ররা চাইলে সকল কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন করে দিতে পারে এটাই তার প্রমান ।
স্বৈরাচারী দেশত্যাগ এর পর গণভবন আর সংসদ ভবন দখলে নিয়েছিল সাধারণ জনতা , ছবিটি সংসদ ভবন দখলের পর তোলা হয়েছিল । জাতীয় পতাকা হাতে খুলে ধরবার চেয়ে বড় বিজয় উদযাপন আর কি হতে পারে ?!
যখন একতরফা এক দাবি উত্থাপন করা হলো তখন ছাত্রসমাজ এবং বেশিরভাগ আমজনতা বলছিলো তারা পুরাতন কাউকে চায়না তাহলে বিকল্প কে ?! আমার মাথাতেও আসলো আসলেই বিকল্প কে ?! তখন নিউজফিড স্ক্রল করতে করতে চোখ পড়লো আমার ডিপার্টমেন্ট এর সিনিয়র , ম্যানেজমেন্ট বাইশ ব্যাচের নাসিফ ইফতেখার ভাইয়ের পোস্টে , পোস্ট আমার অর্থবহুল লেগেছে , পোস্টটি হলো -
বিকল্প!!
বিকারগ্রস্ত জাফরের বিকল্প হবে একজন আসিফ নজরুল।
দালাল নাইমুল ইসলামের বিকল্প একজন মাতিন।
গোলামীর শিকলে বাঁধা সুমন মাশরাফি সাকিবের বিকল্প হবে সালমান আয়মান।
জ্ঞানপাপি মলয়ের বিকল্পে একজন আলী রেজার হাতেও উঠতে পারে জোহা স্যার এর রেখে যাওয়া বাংলাদেশের পতাকা।
আর তোর বিকল্পে আমি!
ইনকিলাব।।।।
আমরা আমাদের বিকল্প পেয়েছি , আমাদের বিকল্প যে তার সেরা কেউ বিকল্প আমার বা আমাদের চোখে নেই । নোবেল বিজয়ী ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস এর বিকল্প আর কে হতে পারে এই মুহূর্ততে বলেন তো ! সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে আছে আমার মতন দুই শিক্ষার্থীও ! বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম । বাংলাদেশের এই পরিবর্তন যাতে উন্নতির জন্য হয় এই আশা আমরা ছাত্রজনতা সহ সবাই করছি ।
উন্নতিতে অনেক বাধা আসবে , এখনও আসতেছে তবে সমস্যা কি ? আমরা মিলেমিশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ও তার উপদেষ্টাদের সাহায্য করে যাবো ।দেশটা তো আমাদের । লড়াইটা আমাদের , আমাদের অস্তিত্বের , আমাদের দেশ রক্ষার , দেশকে গড়বার ।ছাত্রসমাজ যতবার একত্রে জেগে উঠেছে ততবারই ভালো কিছু ব্যতীত অন্য কিছু হয়নি কারণ আমরা বাঙালি , আমাদের দাবায়ে রাখা যায়না , আমরা মরতে জানি , লড়তে জানি , গড়তেও জানি ....
আজকের মতন বিদায় নিচ্ছি বাক্স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছি , পেয়েছি কলম হাতে তুলে লেখার স্বাধীনতা , অনেক গল্প বলার বাকি , অনেক কিছু জানানোর বাকি , দেখা হচ্ছে খুব শীঘ্রই ।ততদিন সবাই ভালো থাকবেন এই আসাই করছি ।