দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি || বেচে থাকাটাই যেখানে দায়...

avatar
(Edited)


image.png
PIXABAY

বর্তমান সময়ে দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতি সম্পর্কে কারোই অজানা থাকার কথা নয়। হঠাৎ করেই অল্প কিছুদিনের ব্যবধানে নিত্য প্রয়োজনীয় সব কিছুর দাম যেন আকাশচুম্বী। করোনা ভাইরাস নামক মরণব্যাধিকে পিছনে ফেলে যখন মানুষ চাইছিলো স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে , ঠিক সেই সময়টাতেই সবচাইতে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। এ যেনো নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মতো অবস্থা!

শুরুটা ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধকে কেন্দ্র করে। প্রয়োজনীয় যোগানের অভাবে কিছুটা বেড়ে যায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। তবে ভোজ্যতেল আকাশ ছুই ছুই। ইতিহাসে প্রথমবারের মত দ্বিগুণ হয়ে যায় ভোজ্যতেলের দাম। যেখানে ৯০ থেকে ১০০ টাকা লিটার তেল পাওয়া যেতো, তার দাম বেড়ে হয় ১৮০/২০০ টাকা প্রতি লিটার৷ তেলের দাম বৃদ্ধিতে তাকে ঘিরে উৎপাদিত সকল পন্যের দামও বেড়ে যায় রাতারাতি।

তার কিছুদিন পরেই জ্বালানি গ্যাসের দামও বেড়ে নাগালের বাইরে। এবার কি আর কোন পন্যের দাম না বাড়িয়ে পারা যায়? ব্যবসায়ীরাও লোকসান ঠেকিয়ে লাভের আশায় সবকিছুর দাম বাড়িয়ে দ্বিগুণ করে দিয়েছে। কাচা বাজারের কথা আর নাইবা বললাম! সবই বেরেছে, কিন্তু বারেনি শুধু সাধারন নাগরিকদের আয়টাই। তাহলে এই আয়ের যোগান আসবে কোথা থেকে?


image.png
PIXABAY

এইতো কিছুদিন আগে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে বহুগুণে। ফলে যাতায়াত ব্যাবস্থাও এখন বেশ চওড়া। সব জায়গাতেই গুন্তে হচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া। সরকার নাকি বহু কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে করোনার সময়কাল থেকে। তাই এই লোকসান পুষিয়ে নিতে এমন সিদ্ধান্ত। কিন্তু আমার কথা ভাই; এতোদিন যাবত যে হাজার কোটি টাকা লাভ হলো, সেই টাকা গেলো কোথায়? সামান্য এই ঘাটতির পূর্ণতা কি এত বছরের লাভ থেকে পূরন করা যায়না?

এখন সাধারন মানুষ যাবে কোথায়? খরচ দ্বিগুণ বাড়লেও বেতন যে বাড়েনি একটা টাকাও। এখন এই বাড়তি খরচের যোগান টা আসবে কোথা থেকে? এই দায়বদ্ধতা কার? অনেকেই দেখি বাংলাদেশকে সিঙ্গাপুর আর ইউরোপের দেশগুলোর সাথে তুলনা দেয়। ওইসব দেশগুলোতে নাকি বসবাসের খরচ এদেশের তুলনায় অনেক বেশি৷ কিন্তু আমার কথা হলো ভাই, এদেশের মানুষও কি সেইসব দেশের মানুষের মতো আয় করে?

এবার আশা যাক একটি উদাহরনে ; গতকাল একটা খবরে দেখলাম চা শ্রমিকরা বেতন বাড়ানোর জন্য আন্দোলন করছে। এদেশে আন্দোলন করাটা অনেক স্বাভাবিক ব্যাপার। দুই-একদিন পর পরই দেখা যায় কেউ না কেউ দাবি আদায়ে আন্দোলন করছে। তাই বিষয়টা প্রথমে গুরুত্ব না দিলেও, পরে জানতে পারলাম তাদের দৈনিক মজুরি মাত্র ১২০ টাকা। একদিনের বেতন ১২০!!!! হা ভাই, মাত্র ১২০ টাকার বিনিময়ে তারা রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে চায়ের পাতা সংগ্রহ করে। যেখানে বাংলাদেশে এক লিটারের ভোজ্যতেলের দামই ২০০ টাকা।

মনে মনে ভাবছিলাম এই সময়ে তারা কিভাবে বেঁচে আছে! হয়তোবা এক বেলা খেয়েই তারা দিন কাটিয়ে দেয়। তাহলে এই কি ভবিষ্যৎ ইউরোপ নামে খ্যাত বাংলাদেশের অবস্থা? এই আন্দোলনে তাদের চাওয়া দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরি। কিন্তু এই ৩০০ টাকা দিয়ে কি একটা পরিবার চলবে? কখনোই না। মাসিক ২৫০০০/৩০০০০ টাকাও এখন নগন্য। সেই হিসেবে তাদের মুজুরি কম হলেও ৫০০ টাকা হওয়া জরুরি বলে আমি মনে করছি।

শুধু মুখে মুখেই দেশ ইউরোপ সিঙ্গাপুর হলে চলবে না। সময় এসেছে সবকিছুতে পরিবর্তন আনার। নাহয় একদিন আফ্রিকার দেশগুলোর মত না খেয়েই মরতে হবে। হয়তো সেদিন আর বেশি দূরে নয়! সৃষ্টিকর্তা আমাদের সহায় হোক।



0
0
0.000
5 comments
avatar

Congratulations @fa-him! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s):

You made more than 500 comments.
Your next target is to reach 600 comments.
You received more than 4000 HP as payout for your posts, comments and curation.
Your next payout target is 5000 HP.
The unit is Hive Power equivalent because post and comment rewards can be split into HP and HBD

You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word STOP

To support your work, I also upvoted your post!

Check out the last post from @hivebuzz:

The Hive community is in mourning. Farewell @erikasue!
Level up your NFTs and continue supporting the victims of war
Support the HiveBuzz project. Vote for our proposal!
0
0
0.000
avatar

যেখানে একজন সাধারণ শ্রমিক ৫০০-১০০০ টাকা মুজুরিতে ডেইলি কাজ এর জন্য নেয় সেখানে চা শ্রমিক কি করে ১২০ টাকা নেয় বা দেয়?

0
0
0.000
avatar

এখানেই তো সব সমস্যা। শুনলাম এখন নাকি মাত্র ১৪৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে ১২০ থেকে। এই পরিবর্তন কি আসলেই কোন কাজে আসবে?

0
0
0.000