ঈদ আমেজ 👳♂️
চারদিকে এখন শুধু ঈদের আমেজ। সবাই ব্যস্ত কোরবানি পশুর গোস্ত খাওয়া নিয়ে। অনেকেই আবার ঈদের সমটাকে রঙিন করতে নানান যায়গায় ঘুরতেও বের হয়ে গেছে। রোযার ঈদের চাইতে কুরবানির ঈদের আনন্দটা অনেক বেশি। কেননা এই ঈদ শুধু ঈদের নামাজ পড়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, কুরবানির পশু যোগ করে বাড়তি মাত্রা।
এবারের কুরবানির ঈদটা আমার স্মৃতিময় হয়ে থাকবে৷ এটাই হয়তো শেষ ঈদ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাজীবনের। আর কয়েকদিন পর পড়াশোনা শেষ করে চাকরীতে জয়েন করলে হয়তো এই জীবনটার মতো ফ্রিডম পাওয়া যাবেনা, যাবেনা নিজের ইচ্ছে মতো সময়গুলোকে উপভোগ করতে। ঈদে ৬/৭ ছুটি, তা দিয়ে কি আর চলে! তাছাড়া পরিবার থেকে বাড়তি প্রেশার তো থাকবেই৷ পরিবারের বড়ো ছেলে, দায়িত্বটা যে অনেক বেশি!
তাই এবারের ঈদটা নিজের মতো করে উপভোগ করবো আগেই স্থির করে নিয়েছিলাম। লাস্ট সেমিস্টারের পরীক্ষা দিয়ে দেরী না করেই চলে আসি বাড়িতে। পরিবারকে একটু সময় দেওয়াটাও ছিলো বড়ো আরেকটি প্লেন। কবে যে আর একটু সময় পাবো সেটা সৃষ্টিকর্তাই যানে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সবচাইতে বড় বন্ধ দিয়েছে এবার, প্রায় একমাস বলা চলে৷ দিবেই না কেনো, শেষ বন্ধ যে!!
তবে বাড়িতে এসে সময়টাকে যেভাবে উপভোগ করতে চেয়েছিলেন সেটা আর হয়ে উঠেনি৷ কারন গ্রামের বন্ধুরা সবাই ব্যাস্ত, কেউ ই এখনো বাড়িতে আসেনি। প্রথম দিনটা একটু একা একাই ঘুরঘুর করে পরদিন থেকে শুধু ঘুম আমার সঙ্গী। এভাবেই চলে যায় একটা সপ্তাহ।
ঈদের দু-একদিন আগে সবাই বাড়িতে এসেছে ঈদ করতে। বিকেলে সব বন্ধুরা একত্রে বসে শুরু আমাদের আড্ডা দেওয়া। অনেকদিন ধরে একত্রে বসে আড্ডা দেওয়া হয়নি, তাই কথা বলতে বলতেই চলে যায় কয়েক ঘন্টা। তারপর একত্রে এটা সেটা খাওয়ার পর্বটা ছিলো বেশ উপভোগ্য।
ঈদ উপলক্ষে এবার পালা কুরবানির পশু কিনার৷ বাড়িতে থাকায় দায়িত্বটা আমার উপরেই পড়েছে। একদিন বিকেলে আমরা কয়েকজন মিলে বের হই গরু কিনার জন্য। এবার কুরবানির পশুর দাম অন্যান্য বাড়ের চাইতে অনেক বেশি। আর বেশি হবেই না কেনো? সবকিছুর দাম তো হইহই, রইরই করে বেড়েই চলছে। অনেক পন্যের দাম তো রীতিমতো দ্বিগুণ হয়ে গেছে। যেই ভোজ্যদ্রব্য ছিলো ৯০/১০০ টাকা প্রতি লিটার, তা আজ বেড়ে দাড়িয়েছে ২২০ টাকা প্রতি লিটারে৷
পশুর হাটে দীর্ঘদিন ঘুরাঘুরি করে কয়েকটা গরু পছন্দ করতে পারলেও দামে বনাবনি হচ্ছিলোনা৷ শেষ পর্যন্ত একটি ষাড় গরু কিনে রওনা হই বাড়ির উদ্দেশ্যে। প্রতি বছরের মতো এবারো গরু নিয়ে হেটে হেটে বাড়ির দিকে চলছিলাম৷ গরু কিনে বাড়ি নিয়ে আসার ব্যাপারটা সবসময়ই আমার একটি পছন্দের কাজ।

ঈদের দিন খুব সকালে উঠে, গরুকে গোসল করিয়ে, ছোট ভাই-বোনদের সাধ্যমতো সালামি দিয়ে চলে যাই ঈদগাহ ময়দানে। গ্রামের সবাই এখানে আসে ঈদের নামায পড়তে। তাই বছরে একবার হলেও দেখা সাক্ষাত হয়ে যায় সবার সাথে৷ নামায শেষে এবার পালা কুরবানী করার। পশু জবাই শেষে একদিনের জন্য কসাই বনে যাওয়া এই ঈদের সবচাইতে আনন্দের বিষয়। এবার ঈদে প্রধান কসাইয়ের দায়িত্বটা আমিই পালন করেছি বলা চলে।
সবকিছু শেষে পরিবারের সবাই মিলে একত্রে বসে গোসত খাওয়াতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ি। বিকেলের দিকে বন্ধুরা মিলে একটু ঘুরাঘুরি আর আড্ডায় শেষ হয় আমার জীবনের অন্যতম স্মৃতিময় একটি ঈদের দিন। আমার সামান্য লেখায় কতটুকু আমি প্রকাশ করতে পেরেছি তাতে আমি বোধগম্য নই! তবে চেষ্টা করতে তো আর কোন বাধা নেই 😃।
আজকের দিনটা তো ঘুমাতে ঘুমাতেই শেষ৷ বাড়িতে এসে এতোক্ষন ঘুমাইনা সাধারণত। তবে গতকালের কুরবানির পশুর হাড় কাটাকাটর ছাপটা আজ বেশ পড়েছে শরীরে৷ যাইহোক, বেচে থাকলে হয়তো সামনে আরো অনেক ঈদ আসবে , কিন্তু এবারের ঈদের মতো হয়তো আর কোন ঈদ আসবে না!
ভালো থাকবেন সবাই। আবারো ঈদ মোবারক ❤️
Hi @fa-him, your post has been upvoted by @bdcommunity courtesy of @rehan12!
Support us by voting as a Hive Witness and/or by delegating HIVE POWER.
JOIN US ON